আমার গান শোনা
সেই কোন ছোট্টবেলায় শেখা প্রথম কবিতা – হেবি সিড়ি ইয়েফ জী, এই চাই যে, কে এলেভেনো পি, সেটা বড়োদের
কাছে বলে খুব বাহবা কুড়োতাম। কিন্তু গানের প্রতি আমার অমর প্রেম জন্ম নিয়েছিল তখন
থেকেই, তাই এটাই সুর করে বলতে বলতে হয়ে গেলো আমার প্রথম গাওয়া গান। সুরটা টুইঙ্কল টুইঙ্কল থেকে ঝাড়া হলেও সেই নিয়ে
সন্দেহ প্রকাশ করার অবকাশ দিইনি বিশেষ। বড়জেঠুমনির ঝাড় খেয়ে অজ্ঞান হওয়ার পরেও গান
শোনা বা গাওয়া নিয়ে কোন বাধাকে আমি বাধা বলেই গ্রাহ্য করিনি। এবং গান গাওয়ার বড়
প্ল্যাটফর্ম নোহারী। শোনারও বটে। তবে আমাদের বাড়িতে গান শোনা মানে কাউকে গাইতে হবে
সেটা, এটাই ছিল নর্ম, কারন মাইক ব্যাপারটার ব্যবহার রায়পাড়ার বাজে ছেলেরাই করে,
এরকমই চিন্তাভাবনা ছিল আমাদের। তাই কোথাও কেউ সুযোগ পেলেই আসর বসে যেত, এবং “মন জাগো মঙ্গললোকে” থেকে “হাম তুম” হয়ে “জন গন মন” তে শেষ হতো।
আরও একটা কারনে লোকজনের গান গাওয়া বেড়ে
যেত নোহারীতে, সেটা অতি অবশ্য ভাবেই ভুতের ভয়। নোহারীতে ভুতের শেষ নেই, তাই ভয়
পাওয়াটা অবশ্যম্ভাবী, আর ভুত যাক বা না যাক, ভয় তাড়াতে গানের কোন জবাব নেই। বাবাগো
মাগো বলে চেঁচাতে হবে না, জাস্ট মনের সমস্ত জোর এক করে, গলার কাঁপুনি টা যতটা
সম্ভব কন্ট্রোল করে, প্যান্ট শুকনো রাখার চেষ্টা করতে করতে গেয়ে যাও, সাহস ঠিক
ফেরত আসবে। ন কারাত্মক শব্ধ অ্যাভয়েড করাটাই সমীচীন, কিন্তু সেটা তো অত সহজে করা
যায়না, তাই সেটাকে নাক বাদ দিয়ে উচ্চারণ করার চেষ্টা করতে হবে, না হলে ভুতেরা
সেটাকে শুনে আমাকে নিজেদের লোক ভাবতে পারে। আর অনেকটা একই কারনে “রাম তেরি বংশী পুকারে” আর “হাম তো চলে পরদেশ” একই রকম পপুলার,
কারন দুটোতেই রাম নাম আছে। পরেরটা বেশি পপুলার, কারন শেষের দিকে একটা বেশ লম্বা
টান আছে “রামা হো রামা হো রামা হো” বলে।
নোহারীতে ভুতের শেষ নেই। বগড়ী রোডে নেমেছ কি ওমনি মস্ত আমলকী গাছ, তাতে
ব্রহ্ম্যদত্যি। কিছুটা ধানজমি পেরিয়ে এগোলে একাড়ে গ্রাম, শুদ্ধ ভাষায় একচক্রনগর,
সেখানে ভুত আছে কিনা জানা নেই, কিন্তু ডাকাত আছে। সেটা পেরলে খানিকটা গিয়ে ভুলা,
সেখানের বাঁশঝাড়ে ভর্তি ভুত পিঁপড়ের চাকের মতো থিকথিক করছে। সেটা যদি পেরোলে, তো চলে
এলো রয়দা, সেখানে আমাদের ফ্যামিলি পুকুর, তাতে মেছো ভুত রাতের বেলায় মাছ ধরে খায়
বলে সবাই জানতাম, শুধু শংকর কাকু বলতো ওটা ঐ গ্রামের লোকদেরই কাজ। তারপর কিছুটা
ধানি জমি, শেষে গিয়ে নরু খাল। জায়গাটার নাম বটতলা। ব্যাস, ওটাই আবার গ্রামের মেন
শ্মশান, আর সমস্ত প্রার্থনাকে ব্যার্থ করে সব পুজোতেই সেখানে দেখা যেত পোড়া কাঠ আর
ছাই, অর্থাৎ কিনা কিছুদিন আগেই কাউকে সেখানে দাহ করা হয়েছে, এবং ঐ পোড়া কাঠ হল
আমার কাছে “এখানে টাটকা ভুত পাওয়া যায়” এর অফিশিয়াল নোটিস। এই জায়গা ভুলার থেকে অনেক বেশি ডেঞ্জারাস,
যদিও হয়ত ভুত ডেন্সিটি পার স্কোয়ার ইঞ্চি ভুলার থেকে কম, তার কারন এখানে সমস্ত
ভুতই পুরো বা আধচেনা লোকের ভুত – তাই এই ভুতেদের
খুবই অবশ্যম্ভাবী ভাবে আমাকে “এঁই বাঁবুঁ,
কোঁথায় চঁল্লি” বলে ডাকার চান্স আছে। এছাড়া বাড়ির লোকাল
ভুত কালীপিসি, ভুলিপিসি ইত্যাদিরা তো আছেনই, যদিও তাঁরা মানুষ হিসেবে খারাপ ছিলেন
না, কিন্তু ভুত হিসেবে কেমন সেটা আনপ্রেডিক্টেবেল। ভুতেদের চটাতে আমি চাইনি কখনই, কিন্তু ভয় কে তো
তাড়াতে হবে, আর তার জন্য আমার একমাত্র হাতিয়ার ছিল গান।
দুর্গাদালানের সামনে যেমন আটচালা, বাঁ
দিকে বেল গাছ, তলাটা বাঁধানো, ওখানেই দুর্গা ষষ্ঠির দিন হয় বেল্লিবরন। সেই উইয়ে
খাওয়া বেলগাছেও নাকি এক ব্রহ্মদত্যি থাকেন, তবে উনি খুব একটা রেগুলার নন, আর বিশেষ
করে পুজোর সময় উনি ওখানে থাকতেন না, বাইরে কোথাও একটা যেতেন, বুদ্ধমাস্টার এর মতো,
এমনই শুনেছিলাম, তাই অনাকে নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামানোর প্রয়োজন হয়নি কখনো। আটচালার
বাঁ দিকে ছোট্ট দোলমন্দির, আটচালা চুড়ো তার, ফুট দুয়েক উঁচু প্ল্যাটফর্ম তার,
মন্দির ইঁটের ওপরে পোড়ামাটির মোটিফ, তার ওপরে চিটেগুড়, চুন আর সুরকির প্রলেপ দিয়ে
তৈরি, সেখানে পুজো হয় কেবল পঞ্চম দোল এর সময়, তা ছাড়া ফাঁকা, কোন বিগ্রহও নেই,
জুতো খুলে উঠে পড়ো, তারপর কর্নার কর্নার খেলো – বুবুদা আছে, মুনা
দি আছে, তনুদি তেমন খেলে না, বাবুন রিঙ্কু আছে, গৌতম আছে, কালু আছে, চেঁড়ু আছে,
এমনকি বদ্যিনাথদার ছেলে খোকা, আর মেয়ে, আমার প্রথম গার্লফ্রেন্ড, বুবিও আছে।
হাঁদুল ইমেজ ঠিক রাখার জন্য এই চেঁচামেচির খেলা অ্যাভয়েড করতো, কিন্তু তাতে খুব
একটা মাইন্ড করিনি সেই সময়, তার কারন ওকে বাদ দিলেও অনেক লোক। তার পেছন দিকে
ভানুকাকা টু দের বাড়ী, সেখানে আটচালাও আছে, দুর্গামন্দির আছে, মস্ত পাকা দোতলা
বাড়ী আছে।
অনেক ছোটবেলা থেকেই জানতাম যে ওরা আমাদের
দশ পুরষ আগেকার আত্মীয়, প্লাস ভানুকাকা টু, যার আসল নাম অলোক বসু, হল আমার বাবার
ছোটোমাসির ছেলে, তাই ঐ বাড়ীটা, অর্থাৎ কিনা ছোটোবোস দের বাড়ীটা, হল ফ্রেন্ডলি
ফ্রন্টিয়ার। ওরা আমাদের যাত্রা দেখবে আমাদের মন্দিরের দড়ি দিয়ে ঘেরা জায়গায় বসে,
আর যদি কোনদিন ওদের আটচালাতে যাত্রা হয়, আমরাও দেখবো ওদের বৈঠকখানার সামনে বসে।
কিন্তু ওদের বাড়ী ছাড়িয়ে আরেকটু গেলেই এনিমি প্রপার্টি – রায়পাড়া।
রায়পাড়া মানে আমাদের কাছে পাকিস্তান। কেন
পাকিস্তান, সেটা কেউ জানায় নি কোনদিন। কিন্তু ওদের কিছুই যে ভালো নয়, এমন একটা
চিন্তাধারা মনের মধ্যে ঢুকে গেছল, তার প্রধান কারন বেশ কয়েকবার ওদের সঙ্গে
বাবা-দাদাদের মারামারি দেখেছি। ওরা দোদোমা ফাটায়, চকলেট আর বাচ্চু বোমা ফাটায়, মদ
টদও নাকি খায়, ওদের গায়ের জোর বেশি। আমাদের দুর্গাঠাকুর বেশ মা মা দেখতে, আর ওদের
দুর্গা? ইশশ্, ডেঞ্জারাস একদম। ওরা বিসর্জন দেওয়ার সময় মশাল জ্বালায়, বোমা ফাটায়,
ব্যাম্পারটি নিয়ে আসে, আমরা শুধুই ঢাকি। তাই ওরা খারাপ। অথচ, ঐ রায়পাড়ারই সুবল
কাকু, যে কিনা ওদের যাত্রার হিরো, সে যখন দুর্গাপুরে আমার মেজজেঠুর বা সেজোজেঠুর
বাড়িতে আসতো, তখন কত গল্প, কত হাসি, নোহারীর ভালো কি করে করা যায়, সেই নিয়ে কত
আলোচনা। ঐ রায়পাড়ারই কিরীটী রায় আমাদের কাতুজেঠুর কত বন্ধু। বাবা কাকাদের কোন কচি
ব্যাথার থেকেই এই বিবাদ কিনা তা জানি না, কিন্তু ওদের সঙ্গে আমাদের পুজোর
কম্প্যারিশন, এবং মারামারি, হতেই থাকতো।
চুপি চুপি বলে রাখি, ওরা কিন্তু অনেক
ব্যাপারেই আমাদের থেকে এগিয়ে থাকতো। যেমন আমাদের বাড়ীশুদ্ধ লোক, মিলনদা বাদে,
মোহনবাগান এর সাপোর্টার, তাই আমাকেও ফুটবল একটুও না বোঝা সত্ত্বেও মোহনবাগানের
সাপোর্টার হতে হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই মনে হতো ইষ্টবেঙ্গল একটু যেন এগিয়ে
থাকে ওভার অল, মনে হতো ওদের রক্তের জোর যেন বেশি। রায়পাড়াও আমাদের কাছে
ইষ্টবেঙ্গলের মতোই। আর ওরাও যেন নিয়তির অমোঘ নিয়মে একটু হলেও আমাদের থেকে
অ্যাডভান্সড। আমাদের তখনো খড়ের আটচালা, ওদের আটচালার চাল টিনের হয়ে গেলো। কাতুজেঠু
বলল টিনের চালার গরম কত জানিস? আমাদের খড়ের চালা রাখা কেবল ঠান্ডা রাখার জন্যেই,
নাহলে এটার হ্যাপা কম নাকি? আর খরচাও অনেক। আমাদের মন্দিরে, যাত্রার আসরে হ্যাজাক
আর ডে লাইট জ্বলে, ওরা নিয়ে এলো জেনারেটার। ওদের মন্দির রাস্তার পাশে, তাই গেট বানানো শুরু
হল, আমরাও কিছুদিন পরে সম্পূর্ণ ফাঁকা একটা জায়গায় একটা গেট বসিয়ে দিলাম। তাতে
আবার টুনি বাল্ব, চেঞ্জার দেওয়া, যায় লোকাল নাম “জ্বলা নিবা”। আমাদের গান শোনা মানে কেউ গাইছে, আর ওদের চলে এলো মাইক। অবশেষে,
অনেক আলাপ আলোচনার পরে এক বছর ঠিক হল, আমাদেরও মাইক আসবে।
সেই মাইক এসে পৌঁছল সপ্তমীর দিন সকালে,
ছাদ হীন কাঁড়ার গাড়ির উপরে চেপে। একটা রেকর্ড প্লেয়ার, একটা এমপ্লিফায়ার, আর গোটা
পাঁচেক স্পিকার, যাকে চলতি ভাষায় বলা হয় ম্যাগনেট, সঙ্গে তিনটে নরম্যাল চোঙ্গা, আর
দুটো লম্বা চোঙ্গা। লম্বা চোঙ্গা দুটো আনার প্রধান কারন অবশই যাতে রায়পাড়ার
প্রতিটি ঘরে আমাদের গান পৌঁছোয়, এবং রায়পাড়া পেরিয়ে যাতে ইস্কুলডাঙ্গাতেও একটু
হলেও শোনা যায় সেই গান। সঙ্গে একটা মাইক্রোফোন, সেটা ভঁদুজেঠুর অর্ডারে আনানো।
পাশে একটা স্টিলের কালো রঙের সামান্য মরচে ধরা ট্রাঙ্ক, তাতে ভরা আছে গুচ্ছ এল পি
আর ই পি ভিনাইল রেকর্ড। সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট যেটা, সেটা হল এই মাইকের জীবনসুধা,
একটা মস্ত বড় চব্বিশ ভোল্টের ব্যাটারী। প্রতিদিন ধাধ্কা থেকে চলে আসবে একটা ফ্রেস
ফুললি চার্জড রিপ্লেস্মেন্ট, আর ঐ কাঁড়ার গাড়ীতেই চলে যাবে চার্জ ফুরোনো ব্যাটারি
টা। সঙ্গে সঙ্গে বিশাল ভিড় জমে গেলো আর জেঠুরা, বিশেষ করে নয়নজেঠু আর ভঁদুজেঠু,
লেগে পড়লো ভিড়ের লোকজনকে একটু ডিসিপ্লিন্ড করতে।
দোল মন্দিরের পাশেই ছিল একটা বহু পুরনো
কুসুম গাছ, একজন, খূব সম্ভবত ক্যাবলাই হবে, উঠে গেলো সেই কুসুম গাছের উপরে কোমরে
একটা নারকোল দড়ি বেঁধে, তারপর সেই দড়ির অন্য মাথায় বেঁধে দেওয়া হল একটা লম্বা
চোঙ্গা, দড়ি ধরে ওপরে তুলে কষে বেঁধে দিল রায়পাড়ার দিকে মুখ করে। আরেকটা বদ্যিনাথদা দের বাড়িতে বাঁধার প্ল্যান
হচ্ছিল, কিন্তু বিশুদার প্রবল প্রতিবাদে সেটার স্থান পরিবর্তন হয়ে চলে গেলো অশ্বত্থ
গাছের ওপরে। বাকি তিনটে বাঁধা হল তিনটা লম্বা বাঁশের মাথায়। আর দোল মন্দিরের
সামনের যায়গাটা হল কন্ট্রোল রুম। সেই কন্ট্রোল রুমের কম্যান্ডার হল দাদা। মেন
শাগরেদ মঙ্গলদা আর চন্দনদা। দাদারা যখন খালে যায়, মানে বড় কাজ আর স্নান করতে, তখন
ইন চার্জ হয়ে যায় ছোড়দা, সঙ্গে ভোম্বলদা, ভ্রমরদা ইত্যাদি। এরই মাঝে, কখনো কখনো
ভঁদুজেঠু ওপরে উঠে মাইক্রোফোন লাগিয়ে পড়তে শুরু করে শ্রী শ্রী চণ্ডী। সব মিলিয়ে
একটা এত গমগমে ব্যাপার, কি বলব। মাঝে একবার হোমের সময় ছোড়দা “হমে তুমসে পেয়ার কিতনা” লাগিয়েছিল, আমার
ছোটঠাকুমা, অর্থাৎ বাবার ছোটকাকিমা, শ্রীমতী রাধারানি বসু আলতো করে বললে “মুখপোড়া”, তাতে ভঁদুজেঠু
দোল্ মন্দিরে উঠে ভ্রমরদাকে তুমুল বকা
দিল, গান বন্ধ।
ঐ সেবারেই, একবার দাদার বোধহয় আমার মুখ
দেখে করুণা হয়েছিল, আমাকে দোল মন্দিরে উঠিয়ে রেকর্ড চালানোর সুযোগ দিল। আমার একটুও
অসুবিধে হয়নি, কারন অপুদের বাড়িতে একদম একরকম রেকর্ড প্লেয়ার চালানো আমি দেখেছি,
ফিলিপ্সের। তিন রকমের স্পিড – একদম পুরনো গুলো
সব ৭৮ স্পিডে চালাতে হয়, আরেকটা ছোট রেকর্ড আছে, যেটার নাম ই পি, সেগুলো ৪৫ এ
চালাতে হয়, আর এল পি, অর্থাৎ কিনা লং প্লেয়িং রেকর্ড চালাতে হয় ৩৩ অথবা ৩৩ ১/৩ আর
পি এম এ। এটা ছিল অষ্টমীর সকাল। সেই পুজোতে আমার ক্যাপ বন্দুক শিকেয় রইল, কোন
কিছুতেই মন ছিল না আর, এমনকি ফ্যালা তামলীর দোকানেও যাইনি আর, শুধুই গান বাজিয়েছি।
অনেকদিন পরে, আস্তে আস্তে এসে গেলো বদল
হওয়ার দিন। একটা অত্যাশ্চর্য জিনিস একবার দিদির প্রাক্তন বর, সেই যাকে আমি মশারীর
স্ট্যান্ড দিয়ে চেপে দিয়েছিলাম, তার কাছে দেখেছিলাম। তাতে গান তো বাজেই, কিন্তু
রেকর্ডিং ও করা যায়। ভেতরে রেকর্ডের বদলে লাগাতে হয় ক্যাসেট। তার নাম টেপ
রেকর্ডার। তো বাবা একবার কিনে ফেললো একটা টেপ রেকর্ডার, কারখানার এক সর্দারজির কাছ
থেকে। সেবারেই পুজোতে গিয়ে দেখি টেপ এর ছড়াছড়ি। কেউ ঢাকির বাজনা রেকর্ড করছে, কেউ,
কাঠি নাচের গান, কেউ বা আবার মন্ত্র পড়া রেকর্ড করে সবাইকে সঙ্গে সঙ্গে প্লে ব্যাক
শুনিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। পুজোর সঙ্গীতায়োজনেও বদল এল, মাইক এর বদলে চলে এলো
বক্স, তার গায়ে লেখা মিদ্যা ক্যাবিনেট। রেকর্ড প্লেয়ার এর বদলে টেপ ডেক। তাও চলেছে
অনেকদিন। তারপর সি ডি চলে এলো, আর এখন তো দেখি পেন ড্রাইভ থেকেই গান চলে। ইওকো-ও
কোম্পানির সেই টেপ রেকর্ডার দেহ রেখেছেন অনেকদিন। পেন্সিল গুলোও হারিয়ে গেছে কথায়
যেন। মৃত কবির কবিতার মতো, ক্যাসেটগুলো রয়ে গেছে শুধু।
No comments:
Post a Comment